ব্যাট হাতে ভাগ্নী স্বপ্ন পূরণ করল মামার

 অরণ্য, ঝাড়গ্রাম-১লা ডিসেম্বর:

বাংলা মহিলা অনুু্র্দ্ধ পনেরো  ক্রিকেট দলের নিয়মিত সদস্য   হিসেবে নজর কেড়েছে ঝাড়গ্রামের ডানহাতি লেগস্পিনার প্রীতি মাহাতো।  ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়খন্ড রাজ্য ঘেঁষা প্রত্যন্ত জামবনির কিশোরী আজ বাংলা মহিলা দলের হয়ে অনুর্দ্ধ ১৫ দলের টুর্নামেন্টে খেলছে ।বিসিসিআই আয়োজিত অনুর্দ্ধ ১৫ মহিলা ওয়ানডে ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বাংলা দলের অন্যতম সদস্য। ২০ নভেম্বর থেকে হরিয়ানার রোহতক ও গুরগাঁয়তে খেলা গুলো হচ্ছে।বাংলা দল লিগ পর্যায়ে সবকটি ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইন্যালে উঠেছে। 

এই গ্রুুপে ছিল বিহার,সিকিম,তামিলনাড়ু,গোয়া,মহারাষ্ট্র। ডানহাতি লেগস্পিনার প্রীতি ভালো ইকনমি রেট রেখে উইকেট পাচ্ছে। জামবনি ব্লকের জামবনি গ্রামের জামবনি হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রীতি মাহাতোর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত এলাকার বাসিন্দারা।জামবনির প্রীতির জন্ম তার মামা বাড়িতে। তার মা রমলা তার তিন মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকেন।প্রীতির জন্ম মামা বাড়িতে।বোনদের মধ্যে  প্রীতিই ছোটো। তার মা পেপার বিক্রি করেন।তার মামা রাজীব মাহাতোর হাত ধরে প্রীতির প্রথম ব্যাটে হাতে খড়ি।রাজীব জামবনি থানার ভিলেজ পুলিশ। এক সময় রাজীব নিজে ছোট বেলায় স্বপ্ন দেখতেন ক্রিকেটার হওয়ার।কিন্তু অভাবের কারনে সেই স্বপ্ন পূরন হয় নি।কিন্তু নিজের ভাগ্নীকে দেখতে চান জাতীয় মহিলা দলে।তাই প্রীতিকে প্রাথমিক ভাবে তিনি শিখিয়েছেন ব্যাটিং।অলরাউন্ডার প্রীতি মূলত লেগ স্পিন করে।তবে মিডিল অর্ডারে ব্যাট হাতে বড় শট নিতে পারে।ভাগ্নীকে তার লক্ষ্যে পৌছে দেওয়ার জন্য জামবনি থানার আইসি অমিত অধিকারীর প্রচুর সাহায্য পেয়েছেন রাজীব। প্রীতি ঝাড়গ্রামে রঘুনাথ মেমোরিয়াল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে বিশ্বনীল দত্তর কাছে প্রশিক্ষণ নেয়।  উল্লেখ্য গত বছর  ৪৫ জন নির্বাচিত হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে ২৫ জনের যে স্কোয়াড গঠিত হয়েছিল তাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চার জনের মধ্যে প্রীতি ছিল ।রাজ্যের ওই  তালিকা সে ছিল  আঠেরো নম্বরে। এদের নিয়ে ইডেনে প্রশিক্ষণ চলেছিল।ঝুলন গোস্বামী দুদিন এসেছিলেন তাদের টিপস দিতে। এদের মধ্যে থেকে এই বছর বাংলা মহিলা অনুর্দ্ধ ১৫ দলে সুযোগ পেয়েছে প্রীতি। 

অন্য দিকে প্রীতির মামা রাজীব মাহাতো তার ভাগ্নির এই সাফল্য ব্যাপক আনন্দিত। তিনি বলেন " প্রীতি আমার কাছে বড় হয়েছে। ওর স্বপ্ন যাতে পূরন হয় তার জন্য চেষ্টা করে গিয়েছি।ওর নিজের খুবই আগ্রহ খেলার প্রতি। আমাদের সামান্য আর্থিক অবস্থায় ও যে আজ এই পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে তাতে খুশি আমরা।আর জামবনি থানার আইসির প্রতি কৃতজ্ঞ।তিনি আমার এই চেষ্টায় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছেন।"

প্রীতির কোচ বিশ্বনীল দত্ত বলেন " বাংলা দলে প্রীতি নিয়মিত সদস্য এখন।হরিয়ানতে যে টুর্নামেন্ট চলছে তাতে প্রতিটি ম্যাচে ভালো ইকনমি রেট নিয়ে বল করছে। মূলত লেগ স্পিনার। লোয়ার ওর্ডারে ব্যাট হাতে বড় শর্ট নিতেও স্বক্ষম। প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে ওর মধ্যে। বাংলা দল একটাও ম্যাচ না হেরে কোয়ার্টার ফাইন্যাল কোয়ালিফাই করেছে। "

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.