কংসাবতির পাড় ভাঙছে আতঙ্কে ২০০ পরিবার

অরণ্য, ঝাড়গ্রাম-১৯ শে ফেব্রুয়ারি:-

কথায় আছে, "নদীর পাড়ে বাস, চিন্তা বারো মাস"। পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গার ভাঙ্গন তো প্রায় রোজই খবরের শিরোনামে থাকে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত নিরাপদ ঝাড়গ্রাম জেলাতেও এবার নদী ভাঙ্গনের আতঙ্ক গ্রাস করছে কয়েকশো পরিবারকে। কংসাবতির নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে ছুঁয়ে ফেলেছে কয়েকটি গ্রাম। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চাষের জমি ও ঘরবাড়ি গ্রাস করেছে নদী। এহেনো পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন কয়েকশো গ্রামবাসী। 

ঝাড়গ্রাম জেলার মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়পুর ও মালিখাল গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবারের দুর্দশা দেখার কেউ নেই। এলাকার জনপ্রতিনিধিও অসহায়, তিনিও ঝাড়গ্রাম প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন নিবেদন করেছেন, কিন্তু বাঁধ তৈরির জন্য এক বস্তা বালিও আসেনি।গ্রামবাসীদের দাবি, বারবার বিডিও, এসডিও ও জেলা শাসকের কাছে বাঁধের কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। জয়পুর গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও চাষের জমিও ইতিমধ্যেই কংসাবতির গর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে সন্তানদের নিয়ে এখন রাতভর জেগে কাটান জয়পুর গ্রামের মানুষজন। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পর তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ঝাড়গ্রাম মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বামনবাঁধ থেকে জয়পুর পর্যন্ত কংসাবতি নদীর পাড় বাঁধিয়েছিল। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি ছিল নদীবাঁধ বাধানোর প্রথম ধাপের কাজ শুরু হোক মালিখাল থেকে জয়পুর পর্যন্ত। কারণ কংসাবতি নদীর এই অংশেই জনবসতি বেশি, নদী ভাঙ্গনের ভয়াবহতাও বেশি। এই ৮০০ মিটারের বেশি অংশেই বাঁধ আগে দরকার ছিল। কিন্তু অভিযোগ, কোনও এক অজ্ঞাত কারণে মালিখাল থেকে জয়পুর ওই ৮০০ মিটার বাঁধ আগে তৈরি না করে জয়পুর থেকে বামনবাঁধ পর্যন্ত নদী পাড় বাধানোর কাজ আগে শুরু করে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যও এই ব্যাপারে অন্ধকারে, তিনিও এলাকাবাসীর দাবির সঙ্গে একমত। কিন্তু আজও ওই অংশের কাজ শুরু করেনি ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, মালিখাল থেকে জয়পুর ৮০০ মিটার নদী পাড় বাঁধানোর জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে প্রায় এক বছর হয়ে গেল। কিন্তু সেই কাজ এখনও শুরুই হয়নি। সামনেই লোকসভা ভোট, তাই কংসাবতি নদীর ভাঙ্গন এবং পাড় বাধানোর অসম্পূর্ণ কাজ এবার যথেষ্ট চাপে রাখবে শাসকদল তৃণমূলকে। কংসাবতি নদীর ক্রমাগত ভাঙ্গনে অতিষ্ট হয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ জমছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.