উমা ফেরেন অষ্টমঙ্গলা সেরে

 অরণ্য,ঝাড়গ্রাম- ১৪ই অক্টোবর:

বেলপাহাড়ির প্রতিরাজগুড়াতে মা বাপের বাড়ি ফেরেন অষ্টমঙ্গলা করে। এটাই বিশেষত্ব ভূমিজ সম্প্রদায়ের পূজা। পুজোশুরুর গল্পোও বড় অদ্ভুত। মায়ের আরাধনার কয়েকদিন বেলপাহাড়ির অরণ্য  ঘেরা প্রতিরাজগুড়া গ্রামে ভুমিজ সাঁওতালসহ স্থানীয় বাসিন্দারা আমিষ বর্জন করে দেবী আরাধনায় ব্রতী হন৷ এখানে চারদিন শুধু  দেবীর পুজো নয়, অষ্টমঙ্গলার পুজো নিয়ে উমা পতিগৃহে যাত্রা করেন৷বেলপাহাড়ির প্রতিরাজগুরা গ্রামে মূলত ভুমিজ  সাঁওতাল সহ স্থানীয়দের বাস।

অরণ্য ঘেরা প্রতিরাজগুরা গ্রাম। এই গ্রামের একটি মাত্র দুর্গা পুজো সুখদেব সিং এর পুজো। এখানে দেবী কোনো ব্রাহ্মণ দ্বারা পূজিত হন না, এখানে মায়ের আরাধনা করেন ভুমিজ সম্প্রদায়ের  মানুষ। এই পুজোর বয়স টেনেটুনে পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই হলেও, পুজোর সূচনার  পিছনে রয়েছে এক অলৌকিক ঘটনা।এই দুর্গা পুজো শুরু করেন  সহদেব সিং নামে এক ভুমিজ সম্প্রদায়ের মানুষ। যা আজও বর্তমান। 

সহদেব বাবু কথা অনুযায়ী নিশুতি এক রাতে দেবীর দর্শন পান। দেবী তাকে নির্দেশ দেন তাঁর আরাধনা  করার। এই ঘটনার কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর, গভীর  রাতে অন্ধকারে খাতার উপরে  তাঁর কলম আপনা আপনি চলতে থাকে পরের দিন সকালে যখন তিনি সেই খাতা দেখেন, তখন দেখতে পান তার অন্ধকারে লিখা লেখা গুলি দেখতে গেলে মন্ত্রে র মতো। এভাবেই লেখালেখি করতে করতে তাঁর কেটে যায়  প্রায় চার বছর। তারপরেই তিনি মায়ের আদেশ পেয়ে বাড়ির মধ্যেই শুরু করেন দেবীর আরাধনা। যত দিন বাড়তে থাকে তত বাড়তে থাকে লোকের সংখ্যা। তাই  বাড়ির লোকের সিদ্ধান্তে   বাড়ির বাইরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় শুরু হয় দেবীর পূজো। শুধু গ্রাম বা শহর নয়,পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকেও বহু মানুষ ছুটে আসেন পুজো দেখতে। পুজোর কটা দিন মহা ধুমধামের সাথে মায়ের আরাধনা হয়। তবে প্রায় জায়গায় দশমীতে মায়ের বিদায় হলেও এখানে মা যান অষ্টমঙ্গলা করে। গ্রামে যে কটাদিন দেবী থাকেন সেকটা দিন পুরো গ্রাম আমিষ বর্জন করেন।





Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.